চুনারুঘাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বশির আহমেদ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সদর ইউনিয়নের গোলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা বশীর আহমেদকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: শাহ আলম। তিনি জানান, বশীর আহমেদর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ সদরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার উপর হামলা মামলায় গ্রেপ্তারের পর ১৯ মার্চ চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মামলা চলাকালীন তিনি শুধু খোরাকি ভাতা পাবেন।
বশীর আহমেদ চুনারুঘাট উপজেলার আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা। জানা যায় বশীর আহমেদ স্কুল ফাঁকি দিয়ে আওয়ামিলীগের সভা মঞ্চ, মিটিং, মিছিল সহ বিভিন্ন পোগ্রামে ব্যস্থ থাকেন । নিয়মিত স্কুলে না আসলেও মাঝেমধ্যে স্কুলে আসেন দুপুরে কিংবা স্কুল ছুটির সময়। কেউ প্রতিবাদ করার সুযোগ নেই। যদি কেউ প্রতিবাদ করতো তাহলে তাকে বদলি ও দেখে নেওয়ার হুমকি দিতেন। তার এই রাজত্ব কায়েমের খুঁটির জোড় ছিলেন কতিপয় নেতারা। রাজনীতিতে রং না বদলালেও নেতা বদলাতে পারদর্শী তিনি। এছাড়া তিনি তার ভাই চুনারুঘাট প্রাথমিক অফিসের অফিস সহকারী আব্দুল হালিমের খুটির জুড়ে তটস্থ রাখতেন শিক্ষক সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার সাধারণ মানুষকে ।
নানা অপকর্মের কারণে ইতিমধ্যে তাকে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও তিনি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তিনিও বেপরোয়া কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামীলীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী , হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু জাহির, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাসেম, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাইফুল আলম রুবেল, মানিক সরকার সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর ঘনিষ্ঠ সহচর বলে দাবী করতেন এবং আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে উল্লেখিত নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দেড় যুগেরও বেশি সময় রাজত্ব কায়েম করেছেন।
এমপি মাহবুব আলীর নাম চষে বেড়ানোর পর যখন তিনি নির্বাচনে হার বরণ করেন তারপর সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সুমনের সাথে ছবি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট করে নিজের বন্ধু দাবী করেন বশীর । এমনকি ব্যারিস্টার সুমনের হুমকি দিয়েও বিভিন্ন অফিসে গিয়ে করতেন তদবির বাণিজ্য। আওয়ামীলীগ ও জেলার নেতার প্রভাব, কাটিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষা অফিসারদের সাথে করতেন অসদাচরণ। অবৈধ চাহিদা পূরণ না করলে দেয়া হতো বদলির হুমকি। প্রায় সময় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে থেকে ফেইসবুকে ছাড়তেন ছবি।
যাহা সংশ্লিষ্টদের নজরে আসলে তাকে নিয়মিত স্কুলে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি এমন অনুরোধের তোয়াক্কা না করে ব্যপরোয়া হয়ে উঠতেন। স্কুল ফাঁকি দিয়ে অনেক সময় স্কুলে না গিয়ে আওয়ামী লীগের দলের বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন । অভিযোগ রয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বশীর মিয়ার নেতৃত্বে হবিগঞ্জ শহরে হামলা চালানো হয়। চুনারুঘাটে চাকুরী করলেও রাজনীতি করার কারণে জেলায় থাকেন তিনি । এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।