হবিগঞ্জে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন হবিগঞ্জের ভ্যাট কর্মকর্তা
হবিগঞ্জে সাবেক ছাত্রদল নেতা পরিচয়ে চাঁদা দাবি করায় গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন হবিগঞ্জের ভ্যাট কর্মকর্তা শামীম আল মামুন। সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ১১টার দিকে শহরের ঘাটিয়া বাজার এলাকার এসডি প্লাজায় এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে গভীর রাত পর্যন্ত ঘাটিয়া বাজার এলাকায় এ নিয়ে অস্থিরতা বিরাজ করেছে।
জানা যায়, বিপণিবিতান এসটি প্লাজায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা এ ভ্যাট কর্মকর্তাকে জনতা আটক করে গণধোলাই দিয়ে অবশেষে থানায় সোপর্দ করেছে। এ সময় ঘাটিয়া বাজার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ভয়ে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন মালিকরা।
বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে জানাজানি হলে শহরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে জেলা ভ্যাট কমিশনার গিয়ে আটক কর্মকর্তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সোমবার (২৪ মার্চ) রাত ১১টার দিকে শামীম আল মামুন নামে ওই কর্মকর্তা কোনো সহকর্মী ছাড়াই শহরের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শনে যান। পরে ঘাটিয়া বাজারের এসডি প্লাজার ম্যানেজারের নিকট সেলস রিপোর্ট দেখতে চান।
একপর্যায়ে মামুন ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলেন, ‘এ টাকা দিলে তিনি সবকিছু ম্যানেজ করে দেবেন। নইলে অনেক টাকা ভ্যাট দিতে হবে।’
এ সময় তার পরিচয়সহ এত রাতে পরিদর্শনে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। এতে উপস্থিত ক্রেতাদের সন্দেহ হলে তাকে আটকে মারধর করেন। মুহূর্তের মধ্যে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে খবর পেয়ে ছুটে যান ভ্যাট কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও চৌধুরী বাজার ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাসহ একদল পুলিশ। কিন্তু উত্তেজিত জনতা শামীম আল মামুনকে ছাড়তে রাজি হননি। একপর্যায়ে ম্যাঙ্গু হোটেলের মালিকসহ আরও কয়েকজন গিয়ে তাদের কাছেও এ কর্মকর্তা চাঁদা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে ঘেরাও করে তাৎক্ষণিক বিচারের দাবি জানান। পরে পুলিশ ও ভ্যাট কমিশনারের আশ্বাসে জনতা তাকে সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
এসডি প্লাজার স্বত্বাধিকারী শুভ জানান, শামীম আল মামুন তাদের প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজেকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পরিচয় দিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তিনি হুমকি-ধমকি দেন। এ সময় ক্রেতারা বিষয়টি দেখে তারা তাকে আটক করেন।
তিনি জানান, এ ঘটনায় তার প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দোকানের ক্যাশ তহবিলের টাকা বেহাত হয়েছে কিনা তা তারা হিসাব করে দেখবেন। তারা এ কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন।
তবে অভিযুক্ত শামীম আল মামুন বলেন, রুটিন অনুযায়ী দোকান পরিদর্শনে এসেছিলাম। কিন্তু আমাকে কতিপয় লোক হেনস্তা ও মারধর করেছে।
সদর মডেল থানার ওসি আলমগীর কবির জানান, জনতা আটক করে তাকে থানায় সোপর্দ করেছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজী মাহমুদুল হক সুজন
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
তারিখ ২৫/০৩/২৫