ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিজস্ব সংবাদ :

ঢাকা অফিসঃ

নিজের সুরক্ষার দাবিতে মা-বাবার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মেয়ে মেহরীন আহমেদ। আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে দায়ের করা মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ তাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যা’তন করেন, অশ্লী’ল ভাষায় গা’লিগা’লাজ করেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন।

মামলায় উল্লেখ.করা হয়, ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় মা-বাবা মেহরীনকে মা’রধর ও গা’লিগা’লাজ করেন, যার ফলে তিনি জ’খম হন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তার স্বাধীন জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এমনকি পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যবহারেও তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং পারিবারিক সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রাখা হচ্ছে।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, তার মা-বাবা নিয়মিতভাবে অপমান, অবজ্ঞা, ভয় দেখানো এবং কটূ ভাষায় গা’লিগা’লাজের মাধ্যমে মানসিক ক্ষ’তি করে চলেছেন। শারী’রিকভাবে আ’ঘা’ত করায় ঘটনাটি স্পষ্টতই সহিং’সতার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আইনজীবীর সহায়তায় তিনি পারিবারিক স’হিংস’তা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করেন। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করে মা-বাবার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

মেহরীনের ভাষ্য- “আমি সুন্দর একটা জীবন চাই, তাই ন্যায়বিচার পেতে আদালতে এসেছি।”

আমাদের সমাজে সন্তানকে শাসন করা কিংবা তার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা আজও ‘ভালোবাসার কঠোর রূপ’ হিসেবে স্বীকৃত। সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে মা-বাবা হয়তো অনেক সময় ‘শাসন’ আর ‘সহিং’সতা’র সীমারেখা বুঝে উঠতে পারেন না। তারা ভাবেন, যা করছেন, তা সন্তানের মঙ্গলের জন্যই।

এই প্রেক্ষাপটে মেহরীনের পদক্ষেপ শুধু একটি আইনি ঘটনা নয়। এটি আমাদের প্রচলিত পারিবারিক মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ ও সম্পর্কের সংজ্ঞার সামনে বড় এক প্রশ্নচিহ্ন টেনে দেয়।

এখানে মা-বাবার নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাসও ভুলে গেলে চলবে না। সন্তান যখন মা-বাবার বিরুদ্ধেই আদালতের পথে হাঁটে, সেটি আমাদের সংস্কৃতিতে এখনো অস্বাভাবিক এবং অনেকে তা লজ্জার বিষয় বলেই মনে করেন।

তবে প্রশ্নটা জটিল- এই মামলা কি শুধুই পারিবারিক দ্বন্দ্ব, নাকি এটি এক বড় বার্তা? নতুন করে ভাবার আহ্বান?

আজ মেহরীন দাঁড়িয়েছেন ন্যায়ের আশায়, কিন্তু তার মা-বাবার চোখেও হয়তো লুকিয়ে আছে এক নিঃশব্দ প্রশ্ন- আমরা কি সত্যিই এতটাই ভুল ছিলাম?

এই জবাব হয়তো একমাত্র সমাজই দিতে পারে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:২২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
৩২ বার পড়া হয়েছে

আপডেট সময় ০৭:২২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

ঢাকা অফিসঃ

নিজের সুরক্ষার দাবিতে মা-বাবার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মেয়ে মেহরীন আহমেদ। আজ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে দায়ের করা মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, তার মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা নাসির আহমেদ তাকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যা’তন করেন, অশ্লী’ল ভাষায় গা’লিগা’লাজ করেন এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন।

মামলায় উল্লেখ.করা হয়, ২৫ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় মা-বাবা মেহরীনকে মা’রধর ও গা’লিগা’লাজ করেন, যার ফলে তিনি জ’খম হন। তিনি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও তার স্বাধীন জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এমনকি পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যবহারেও তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে এবং পারিবারিক সম্পদ ও সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রাখা হচ্ছে।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, তার মা-বাবা নিয়মিতভাবে অপমান, অবজ্ঞা, ভয় দেখানো এবং কটূ ভাষায় গা’লিগা’লাজের মাধ্যমে মানসিক ক্ষ’তি করে চলেছেন। শারী’রিকভাবে আ’ঘা’ত করায় ঘটনাটি স্পষ্টতই সহিং’সতার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

আইনজীবীর সহায়তায় তিনি পারিবারিক স’হিংস’তা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী মামলাটি দায়ের করেন। আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করে মা-বাবার বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

মেহরীনের ভাষ্য- “আমি সুন্দর একটা জীবন চাই, তাই ন্যায়বিচার পেতে আদালতে এসেছি।”

আমাদের সমাজে সন্তানকে শাসন করা কিংবা তার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা আজও ‘ভালোবাসার কঠোর রূপ’ হিসেবে স্বীকৃত। সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে মা-বাবা হয়তো অনেক সময় ‘শাসন’ আর ‘সহিং’সতা’র সীমারেখা বুঝে উঠতে পারেন না। তারা ভাবেন, যা করছেন, তা সন্তানের মঙ্গলের জন্যই।

এই প্রেক্ষাপটে মেহরীনের পদক্ষেপ শুধু একটি আইনি ঘটনা নয়। এটি আমাদের প্রচলিত পারিবারিক মূল্যবোধ, দায়িত্ববোধ ও সম্পর্কের সংজ্ঞার সামনে বড় এক প্রশ্নচিহ্ন টেনে দেয়।

এখানে মা-বাবার নিঃশব্দ দীর্ঘশ্বাসও ভুলে গেলে চলবে না। সন্তান যখন মা-বাবার বিরুদ্ধেই আদালতের পথে হাঁটে, সেটি আমাদের সংস্কৃতিতে এখনো অস্বাভাবিক এবং অনেকে তা লজ্জার বিষয় বলেই মনে করেন।

তবে প্রশ্নটা জটিল- এই মামলা কি শুধুই পারিবারিক দ্বন্দ্ব, নাকি এটি এক বড় বার্তা? নতুন করে ভাবার আহ্বান?

আজ মেহরীন দাঁড়িয়েছেন ন্যায়ের আশায়, কিন্তু তার মা-বাবার চোখেও হয়তো লুকিয়ে আছে এক নিঃশব্দ প্রশ্ন- আমরা কি সত্যিই এতটাই ভুল ছিলাম?

এই জবাব হয়তো একমাত্র সমাজই দিতে পারে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/dainikprohor/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471