কেন বাচ্চাদের জ্বর এখন সহজে কমছে না?
বর্তমানে আমরা লক্ষ্য করছি, অনেক শিশু জ্বরে আক্রান্ত হলে সেই জ্বর ৩-৫ দিন এমনকি কখনও ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। অনেক সময় সাধারণ প্যারাসিটামল দিয়েও জ্বর কমে না বা অল্প সময় পর আবার উঠে যায়। এর পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ রয়েছে:
🔎 ১. ভাইরাল ইনফেকশন দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে
বর্তমানে ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যাডিনোভাইরাস, হিউম্যান প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাস বেশি সময় ধরে জ্বর দিচ্ছে।
এসব ভাইরাল জ্বর ৫-৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং জ্বরের ওঠানামা দেখা যায়।
💊 ২. অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স
অনেক সময় জীবাণু (ব্যাকটেরিয়া) সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকে সাড়া দেয় না।
➡️ ফলে জ্বর পুরোপুরি কমতে দেরি হয় এবং নতুন করে অ্যান্টিবায়োটিক পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে।
🌫️ ৩. আবহাওয়ার পরিবর্তন ও ধুলাবালি
গরম-ঠান্ডার তারতম্য, বৃষ্টির সময় ঠান্ডা লাগা বা অতিরিক্ত ধুলাবালির সংস্পর্শে বাচ্চারা সহজেই অসুস্থ হচ্ছে।
➡️ এতে দীর্ঘস্থায়ী কাশি-সর্দি এবং তার সাথে জ্বরও দেখা যাচ্ছে।
৪. ভুল ওষুধ বা ঘন ঘন ওষুধ পরিবর্তন
অনেক সময় শুরুতেই ভুল ডোজ বা অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে জ্বর সহজে নিয়ন্ত্রণে আসে না।
➡️ এতে সংক্রমণ পুরোপুরি সারে না, জ্বর বারবার ফিরে আসে।
🦠 ৫. ডেঙ্গু, টাইফয়েড, নিউমোনিয়া ইত্যাদি জটিল সংক্রমণ বেড়েছে
এই ধরনের সংক্রমণে জ্বর অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং উচ্চমাত্রার হতে পারে।
➡️ জ্বর কমতে ৭–১০ দিন সময় লাগতে পারে।
৬. ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে
যেসব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে, ঘন ঘন অসুস্থ হয় বা ঘুম ঠিকমতো হয় না — তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে।
➡️ ফলে তারা সহজেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং জ্বর সহজে সারে না।
✅ শিশুর বয়স, ওজন ও উপসর্গ বিবেচনায় সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে হবে
✅ প্রাথমিক জ্বরের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল ও বিশ্রামই যথেষ্ট, তবে
✅ জ্বর ৩ দিন পার হলে রক্ত পরীক্ষা (CBC, CRP, Dengue, Typhoid, Urine R/M ইত্যাদি) করা জরুরি
✅ শিশুকে তরল খাবার, ঘন ঘন বুকের দুধ/খাবার, আরামদায়ক পরিবেশ দিতে হবে
কখন দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
জ্বর ৩ দিনের বেশি স্থায়ী হলে
বারবার বমি, খাওয়া বন্ধ, খুব দুর্বল হয়ে গেলে
শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি বা অচেতন ভাব দেখা দিলে
খুব কম প্রস্রাব হলে বা বাচ্চা একেবারেই নিস্তেজ থাকলে
-ডাঃ মাহাদী হাসান